ক্রোয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসা বাংলাদেশিদের জন্য (২০২৫ আপডেটেড গাইড)
ক্রোয়েশিয়া সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত পরিচিতি:
ক্রোয়েশিয়া ইউরোপের একটি সুন্দর দেশ, যা তার ঐতিহাসিক স্থাপত্য, নীল জলরাশি এবং দর্শনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য জনপ্রিয়। ডুব্রোভনিক, স্প্লিট, প্লিটভিস লেকস ন্যাশনাল পার্কের মতো স্থানগুলো পর্যটকদের জন্য অন্যতম আকর্ষণ।
বাংলাদেশিরা ক্রোয়েশিয়া ভ্রমণের জন্য টুরিস্ট ভিসা পেতে পারে কি?
হ্যাঁ, বাংলাদেশি নাগরিকরা ক্রোয়েশিয়া ভ্রমণের জন্য শর্ট-স্টে (C) টুরিস্ট ভিসা পেতে পারে। তবে বাংলাদেশে ক্রোয়েশিয়ার কোনো দূতাবাস নেই, তাই ভারতের নয়াদিল্লিতে অবস্থিত ক্রোয়েশিয়ান দূতাবাসের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়।
টুরিস্ট ভিসার প্রকারভেদ:
ক্রোয়েশিয়ার শর্ট-স্টে ভিসার কয়েকটি ধরন রয়েছে, যেমন:
- টুরিস্ট ভিসা (ব্যক্তিগত বা গ্রুপ ট্যুরের জন্য)
- ব্যবসায়িক ভিসা
- ফ্যামিলি/ফ্রেন্ডস ভিজিট ভিসা
- শিক্ষামূলক সংক্ষিপ্ত ভ্রমণের ভিসা
ক্রোয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র:
১. ব্যক্তিগত নথি:
✅ পাসপোর্ট: কমপক্ষে ৬ মাসের মেয়াদ থাকা প্রয়োজন এবং পুরাতন পাসপোর্ট থাকলে সেটিও দিতে হবে।
✅ পাসপোর্ট সাইজ ছবি: সাম্প্রতিক, সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড, ম্যাট ফিনিশ, ৩.৫ × ৪.৫ সেমি।
✅ ভিসা আবেদন ফর্ম: অনলাইনে ফরম পূরণ করে প্রিন্ট করে স্বাক্ষর করতে হবে।
✅ কভার লেটার: ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থাকতে হবে।
২. ফিনান্সিয়াল নথি:
✅ ব্যাংক স্টেটমেন্ট: সর্বশেষ ৬ মাসের লেনদেন সংবলিত স্টেটমেন্ট, ব্যাংকের স্বাক্ষর ও স্ট্যাম্পসহ।
✅ ব্যাংক সলভেন্সি সার্টিফিকেট
✅ ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (TIN) এবং ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন (ITR)
✅ সঞ্চয়পত্র (যদি থাকে)
৩. ভ্রমণের প্রমাণ:
✅ ফ্লাইট বুকিং: আপাতত কনফার্ম টিকিটের রিজার্ভেশন।
✅ হোটেল বুকিং: অথবা আমন্ত্রণপত্র (ইনভাইটেশন লেটার) যদি কোনো আত্মীয় বা বন্ধুর আমন্ত্রণে যাচ্ছেন।
✅ ভ্রমণ বীমা: ন্যূনতম ৩০,০০০ ইউরো কভারেজসহ।
৪. পেশাগত নথি (যদি প্রযোজ্য হয়):
✅ চাকরিজীবীদের জন্য কর্মস্থলের ছুটির অনুমতিপত্র ও NOC
✅ ব্যবসায়ীদের জন্য ট্রেড লাইসেন্স, ব্যবসার আর্থিক বিবরণ
✅ শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুল/কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি ও অধ্যয়নের প্রমাণপত্র
ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া:
১️⃣ নথি প্রস্তুত করুন – উপরোক্ত নথিপত্র সংগ্রহ করুন।
২️⃣ অনলাইনে ফরম পূরণ করুন – Croatia Visa Application Portal এ গিয়ে আবেদন ফরম পূরণ করুন।
৩️⃣ নয়াদিল্লিতে আবেদন জমা দিন – ভিসা আবেদন ও নথিপত্র নয়াদিল্লির ক্রোয়েশিয়ান দূতাবাসে সরাসরি জমা দিতে হবে।
৪️⃣ ভিসা ফি প্রদান করুন – আবেদন ফি পরিশোধ করুন।
৫️⃣ সাক্ষাৎকার দিন (যদি প্রয়োজন হয়) – কনস্যুলার অফিসার চাইলে সাক্ষাৎকার নিতে পারে।
৬️⃣ ভিসার সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করুন – সাধারণত ১৫-৩০ কার্যদিবস সময় লাগতে পারে।
ক্রোয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসার খরচ:
খরচের ধরন | আনুমানিক খরচ (BDT) |
---|---|
ভিসা ফি | ১২,০০০ – ১৫,০০০ টাকা |
ভ্রমণ বীমা | ৫,০০০ – ৮,০০০ টাকা |
ফ্লাইট টিকিট | ৭০,০০০ – ১,৫০,০০০ টাকা |
হোটেল বুকিং | ৫,০০০ – ৩০,০০০ টাকা (স্টে অনুযায়ী) |
অন্যান্য | ১০,০০০ – ২০,০০০ টাকা |
মোট আনুমানিক খরচ | ৩,০০,০০০ – ৪,৫০,০০০ টাকা |
প্রসেসিং সময়:
⏳ সাধারণত ১৫-৩০ কার্যদিবস
📌 জরুরি ভিসার জন্য দ্রুত প্রসেসিং অপশন নেই।
কেন ক্রোয়েশিয়া ভ্রমণ করবেন?
🌊 ডুব্রোভনিকের প্রাচীন শহর – Game of Thrones সিরিজের বিখ্যাত লোকেশন।
🏞️ প্লিটভিস লেকস ন্যাশনাল পার্ক – চমৎকার জলপ্রপাত ও নীল জলাধার।
🏖️ অ্যাড্রিয়াটিক সমুদ্রের সৈকত – ইউরোপের সেরা সমুদ্রসৈকত।
🏰 ঐতিহাসিক স্থান ও দুর্গসমূহ – শতাব্দী-প্রাচীন স্থাপত্য।
গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ:
✅ সকল নথিপত্র যথাযথভাবে প্রস্তুত করুন।
✅ ফেক ডকুমেন্ট ব্যবহার করবেন না।
✅ আপনার ভ্রমণের উদ্দেশ্য স্পষ্টভাবে উল্লেখ করুন।
✅ যথাযথ আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ দিন।
উপসংহার
ক্রোয়েশিয়া বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য একটি চমৎকার গন্তব্য। ভিসা পেতে হলে যথাযথ প্রস্তুতি নিতে হবে এবং নয়াদিল্লিতে আবেদন করতে হবে। ভ্রমণের আগে বিস্তারিত পরিকল্পনা করুন এবং প্রয়োজনীয় সকল নথিপত্র ঠিকঠাক প্রস্তুত রাখুন।
Post a Comment